ফিলিস্তিনের আল আকসা মসজিদে হামলা করেছে ইসরায়েল। এটা নতুন কোনো ঘটনা না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই এমনটা হয়ে আসছে। আসলে ইহুদিদের নিয়ে বিভিন্ন জাতি ও রাষ্ট্রে বিভিন্ন ধরনের বিরুপ মনোভাব ও মিথ প্রচলিত আছে। এদের কর্মকান্ডে মনে হয় তাদের নামে প্রচলিত মিথ গুলো মিথ্যা না ; পুরোপুরি সত্য।
ইহুদিরা মুলত ফিলিস্তিন এলাকার আদি বাসিন্দা। এরা প্রথম থেকেই যাযাবর জাতি। একেক সময়ে একেক জায়গায় সবতি গড়ে তোলা এদের বৈশিষ্ট্য। এই বৈশিষ্ট্যের পেছনে একাধিক কারণ আছে। প্রধান কারণ, এরা ছিলো পশুপালনকারি। পশুর পাল নিয়ে বিভিন্ন চারণভূমিতে এরা চরে বেড়াতো। ফলে এক জায়গায় তারা বসতি গড়তে পারনি। দ্বিতীয় কারণ, এরাই সম্ভবত পৃথিবীতে প্রথম সুদীকারবারি জাতি। সুদের কারবারকে এরা পেশা হিসেবে নিয়ে ছিলো। চড়া সুদে বিনিয়োগের ব্যবসা করার কারণে সবসময় এদের সাথে অন্য সম্প্রদায় গুলোর বিবাদ লেগেই থাকতো। ফলে এরা এই বিনিয়োগের বা সুদের কারবার এক জায়গায় বেশিদিন করতে পারতো না। তাই তাদের সুনিদ্রিষ্ট বসতি ছিলো না।
ইহুদিদের ব্যাভিচারী স্বভাবের কারনে খৃষ্টান ধর্মাবলম্বীরা এদের মোটামুটি গন্ডিবদ্ধ করে রাখে। খৃষ্ট শাসন আমলে এরা তাই নিকৃষ্টতর জীবন যাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। ইসলামের আগমনে এদের কিছুটা উন্নতি ঘটে। বিশেষ করে মুসলিম শাসকদের সাম্যবাদী মানসিকতার কারনে এরা স্বাধীন জীবন যাপনের সুযোগ পায়। এর স্বপক্ষে প্রমাণ মেলে খলিফা ওমরের শাসন আমলেও। সে সময় তিনি ফিলিস্তিন এলাকায় বিজয় অর্জন করলে খৃষ্টানদের কাছে জানতে পারেন, স্থানীয় ইহুদিরা বসবাস করে আবর্জনার ভাগারের পাশে। খলিফা এটা জানার পর তাদের জন্য পরিচ্ছন্ন স্থানে বসবাসের সুযোগ করে দেন।
আসলে ইহুদিরা মুসলমান শাসন আমলে নিজেদের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটানোর পাশাপাশি এরা এদের পুরনো স্বভাবের দোষে আবার মুসলিম বিদ্বেষী হয়ে ওঠে। এর ফলে মুসলিম শাসকদের তাড়া খেয়ে এবং নিজের সুদের কারবার চালু রাখতে এরা ধীরে ধীরে ইউরোপে জমতে শুরু করে। ওসমানীয় খেলাফতের সময়ে এরা জার্মানিতে মোটামুটি নিজেদের ভালো ঘাঁটি তৈরী করে। একই সময় খৃষ্টানরা মুসলিম শাসনের অবসানের জন্য উপায় খুঁজতে থাকে। সেক্ষেত্রে নতুন কৌশল আবিষ্কার, নতুন ধরনের যুদ্ধাস্ত্র তৈরীর বিকল্প কিছু তাদের কাছে ছিলো না। খৃষ্টানদের এই মনোভাবের পুরো সুযোগটি নেয় ইহুদিরা। তারা চড়াসুদে এসব আগ্রহী খাতে অর্থ বিনিয়োগ করতে থাকে। ইহুদিদের এমন বিনিয়োগেই এগোতে থাকে জার্মানীরা।
কিন্তু ইহুদিদের নিকৃষ্ট স্বভাব তাদের চিরিত্রের মধ্যে তো সবসময় মিশেই ছিলো। ফলে সাধারণ মানুষ ইহুদিদের নানা অনাচারের শিকার হয়। হিটলারও এর ব্যতিক্রম নয়। এক ইহুদি তার মাকে নিয়মিত ধর্ষণ করছে, এই ন্যাক্কার জনক দৃশ্য তিনি ছোট বেলায় দেখে ছিলেন। ফলে ইহুদি বিদ্বেষ নিয়েই তিনি বড় হয়ে ছিলেন। এর পরিণতি কেমন হয়ে ছিলো, সেটা সবার জানা। ষাট লক্ষ ইহুদিকে গ্যাস চেম্বারে ঢুকিয়ে মেরে ছিলেন হিটলার।
হিটলারের তাড়া খেয়ে ইহুদিরা বেশ বেকায়দায় পড়ে যায়। দীর্ঘ দিনের সুখের আবাস ছেড়ে সমস্ত বিত্ত বৈভব ফেলে শুধু প্রাণটা নিয়ে তারা দিগবিদিক পালাতে থাকে। বেশির ভাগই আশ্রয় নেয় জার্মানির পাশের দেশগুলোতে। এদের একটি গবেষক দলকে মার্কিনিরা নিয়ে যায়। একটি বড় গবেষক দল চলে যায় যুক্তরাজ্যে। চার্চিলের নির্দেশে এরা জার্মান বিরোধী যুদ্ধে মরণাস্ত্র তৈরীতে নেমে পড়ে। ইহুদিরা যেসব বিনিয়োগ, ব্যবসা ও গবেষণা শুরু করেছিলো মুসলিম নিধনের জন্য সেটা এবার শুরু হয় হিটলারকে দমন ও নিজেদের জীবন বাঁচানোর জন্য। অবশ্য এই গবেষক দলটি চার্চিলের কাছে বিশেষ কোনো প্রতিদান চায় নি। শুধু চেয়ে ছিলো একটি স্বাধীন ইহুদি আবাস ভূমি। চার্চিল কথা রেখে ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিজয়ের পর চার্চিল স্ব-উদ্যোগে ইসরায়েল রাষ্ট্র পয়দা করলেন।
তবে তার আগেই হিটলারের ধাওয়া খেয়ে অনাহারী অর্ধনগ্ন হাজার হাজার ইহুদি সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ও বিভিন্ন পথে গাজা এলাকায় এসে আশ্রয় নেয়। তখন আজকের ফিলিস্তিনিরা মানবিকতা দেখিয়ে তাদের আশ্রয় দিয়ে ছিলো। নিজেদের কৃষি জমিতে কাজ করার সুযোগ দিয়ে ছিলো। আর এই আশ্রয় দানই পরে বুমেরং হলো ফিলিস্তিনিদের জন্য। ইহুদিরা এক সময় দাবি করে বসলো, এই জমি গুলো তো এক দিন তাদের আদি পিতাদেরই ছিলো। সুতরাং এখন এ জমি তাদের। বাস ! ইসরায়েল তাদের স্বাধীন ঝান্ডা উড়িয়ে নিজেদের রাষ্ট্র কায়েম করে ফেললো। ইউরোপ থেকে পূর্বের প্রতিশ্রুতি মোতাবেজ চার্চিল সমস্ত কলকাঠি নাড়লেন। তাছাড়া ইহুদিদের পূর্বের আচরণ কেউ তো ভোলে নি। সুতরাং এটাকে ইউরোপ থেকে এদের চিরতরে বিতাড়িত করার একটি মানবিক মোক্ষম সুযোগ হিসেবেই নিলেন চার্চিল সহ সমস্ত ইউরোপীয় মোড়লরা।
সুতরাং ইহুদিদের মতো পঁচা মাল আর কেউ সেধে নিজের ঘাড়ে নেবে না। যা করেই হোক ; এদেরকে মধ্যপ্রাচ্যে উদার মুসলিম হুজুরদের কাঁধেই রেখে দেবে। এবং গোটা পৃথিবীজুড়ে যে ভয়াবহ যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আর একটি মুসলিম বিজয়ের ইঙ্গিত মুসলমানদের মধ্যে প্রচলিত আছে, তার সূত্রপাত হবে এই ইহুদিদের মাধ্যমেই। এবং এটা এখন স্পষ্ট যে, সেটার সূত্রপাত হবে ইসরায়েলের এমন কর্মকান্ড থেকেই। অতএব এখন শুধুই অপেক্ষার পালা।
সাঈদ আনাম
শিক্ষক, লেখক, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও উন্নয়ন পরামর্শক
ছবিঃ ফেসবুক।
ছবি বর্ণনা ঃ প্রথম ছবিটি হিটলারের ধাওয়া খেয়ে গাজায় আসা ইহুদি।